Wednesday, June 7, 2017

মাকসুদুল আলম (বাংলাদেশি বিজ্ঞানী)

Image result for ড. মাকসুদুল আলমড. মাকসুদুল আলম (জন্মঃ ১৪ই ডিসেম্বর, ১৯৫৪ - মৃত্যু: ২০ ডিসেম্বর, ২০১৪) ছিলেন একজন বাংলাদেশী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে পাটের জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কারের ঘোষণা দেন। 
জিনতত্ত্ববিদ। তার নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ডাটাসফটের একদল উদ্যমী গবেষকের যৌথ প্রচেষ্টায় ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে সফলভাবে উন্মোচিত হয় পাটের জিন নকশা । ২০১০ সালের ১৬ জুন
জীবনী
মাকসুদুল আলম ফরিদপুরে ১৯৫৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা "দলিলউদ্দিন আহমেদ" ছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসের (ইপিআর) একজন কর্মকর্তা এবং তার মা ছিলেন লিরিয়ান আহমেদ একজন সমাজকর্মী ও শিক্ষিকা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তার পিতা শহীদ হলে পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে মা লিরিয়ান আহমেদের উপর। শিক্ষকতা করে তিনি তাঁর চার ছেলে ও চার মেয়েকে গড়ে তোলেন।
 শিক্ষাজীবন
গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে স্বাধীনতার পর মাকসুদুল আলম চলে যান রাশিয়ায়। সেখানে মস্কো রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অণুপ্রাণবিজ্ঞানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর (১৯৭৯) ও পিএইচডি (১৯৮২) সম্পন্ন করেন। পরে জার্মানিতে বিখ্যাত ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৮৭ সালে প্রাণরসায়নে পুনরায় পিএইচডি করেন। মস্কোতে মাকসুদ ভ্লাদিমির পেত্রোভিচ মুলাচেভের সংস্পর্শে আসেন।
মাকসুদুল আলম ও তাঁর ছোট ভাই মাহবুবুল আলম ও বন্ধু জোনায়েদ শফিককে নিয়ে গড়ে তোলেন অনুসন্ধানী বিজ্ঞান ক্লাব। ক্লাবের কাজ ছিল মূলত গাছ পর্যবেক্ষণ, গাছের চারা লাগানো এবং পাতা সংগ্রহ। গাছের পাতা এ্যালবামে সাজিয়ে বই দেখে দেখে বের করতেন গাছগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম।
 কর্মজীবন 
পেত্রোভিচের প্রাণরসায়নের নানা শাখায় অবদান রয়েছে। জার্মানিতে তিনি কাজ করার সুযোগ পান প্রাণরসায়নের অন্য দুই দিকপাল "ডিয়েটার ওয়স্টারহেল্ট" ও "জেরাল্ড হেজেলবাউয়ের" সঙ্গে। জার্মানির পর তিনি হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে মেরিন বাই প্রডাক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সেন্টারে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গবেষণার জন্য মাকসুদ ও তাঁর সহকর্মীদের ১০ লাখ ডলার অনুদান দেয়। ১৯৯২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন।ওই সেন্টারে কাজ করার সময় ২০০০ সালে তিনি ও তাঁর সহকর্মী "রেন্ডি লারসেন" প্রাচীন জীবাণুতে মায়োগ্লোবিনের মতো এক নতুন ধরনের প্রোটিন আবিষ্কার করেন। এ আবিষ্কারের সুবাদে মাকসুদের খ্যাতি ও দক্ষতা সবার নজরে আসে। ২০০১ সাল থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসাবে কাজ করে যান।হাওয়াইয়ান পেঁপের জিন নকশা উন্মোচনের জন্য ডাক পড়ে তাঁর। এ কাজ সম্পন্ন করার পর বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারের প্রচ্ছদে স্থান পান তিনি। পেঁপের জিন নকশা উন্মোচনের পর তিনি পাটের জিন নকশা উন্মোচনের কথা ভেবেছিলেন। সে সময় কয়েকবার বাংলাদেশেও এসেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর ডাক পড়ে মালয়েশিয়ায় রাবারের জিন নকশা উন্মোচনের জন্য, ওই কাজেও তিনি সফল হন। পরে তিনি মনোনিবেশ করেন পাটের জিন নকশা উন্মোচনে। 
মৃত্যু
মাকসুদুল আলম ২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বরযুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে কুইনস মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি যকৃতের জটিলতায় ভুগছিলেন।

0 comments:

Post a Comment